Sep 24, 2024 by Saharuk khan
Anubrata Mondal কেষ্টর দরজায় পৌঁছে গেলেও দেখা করার সুযোগ পেলেন না রাজ্যের মন্ত্রী এবং বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীসহ জেলার আরও কয়েকজন বিশিষ্ট নেতা। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরেও কেষ্ট কোনো সাড়া দেননি, এবং নেতারা ফিরে যেতে বাধ্য হন। এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোড়ন তুলেছে, কারণ এই নেতাদের কাছে কেষ্টর সঙ্গে বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে কেন কেষ্ট এই সাক্ষাৎ এড়িয়ে গেলেন, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বোলপুর: শাসক দলের অন্দরমহলে অনেকেই ভালোবেসে তাঁকে বীরভূমের ‘সিংহ’ বলে সম্বোধন করেন। তাঁর সাহসিকতা ও দৃঢ় নেতৃত্বের কারণে তিনি দলের মধ্যে এক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন। জনমানসে তাঁর এই পরিচিতি দলীয় শক্তির প্রতীক হিসেবেও ধরা হয়। বিভিন্ন সময়ে তিনি নিজের সিদ্ধান্ত ও কার্যকলাপের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে, তিনি শুধু নামেই নয়, কাজে ও সাহসিকতায়ও একেবারে সিংহের মতোই অটল।
মঙ্গলবার বীরভূমে ফিরে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই ‘সিংহের’ মূর্তি ধারণ করলেন অনুব্রত মণ্ডল–
মঙ্গলবার বীরভূমে ফিরে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই ‘সিংহের’ মূর্তি ধারণ করলেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর বাড়ির সামনে মানুষের ভিড় উপচে পড়ল। নিজেই এগিয়ে এসে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। তবে, তাঁর বাড়ির দরজায় গিয়ে পৌঁছালেও দেখা করার অনুমতি পেলেন না রাজ্যের মন্ত্রী এবং বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীসহ জেলার আরও বেশ কিছু নেতা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও, তারা অবশেষে সাক্ষাৎ না করেই ফিরে যান, যা রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। অনুব্রত মণ্ডলের এমন আচরণকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সূত্রের মতে, কাকে কাকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না, তার তালিকা আগে থেকেই নাকি নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। সেই তালিকায় যে রাজ্যের এক মন্ত্রীর নামও থাকতে পারে, তা কারও কল্পনাতেও ছিল না। কিন্তু বাস্তবে সেটাই ঘটেছে, আর এর পর থেকেই অনুব্রত ঘনিষ্ঠরা বলতে শুরু করেছেন, “দাদা যেমন, তেমনই থাকেন। যা মনে করেন, সরাসরি বলেন। বুকের পাটা আছে, তাই যাকে শত্রু ভাবেন, তাকে তা মুখের ওপর বলতেও দ্বিধা করেন না!” অনুব্রতের এই নির্ভীক অবস্থান রাজনীতির অন্দরমহলে নতুন করে আলোড়ন তুলেছে।
Anubrata Mondal অতীত ভোলেননি অনুব্রত? চন্দ্রনাথ, বিকাশদের বাড়িতে ঢুকতেই দিল না বীরভূমের ‘বাঘ’ অনুব্রত মণ্ডল
অর্থাৎ, এলাকায় ফিরে আসার পর অনুব্রত মণ্ডল সরাসরি কিছু না বললেও আকার-ইঙ্গিতে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন—সুবিধাবাদীরা সাবধান! তাঁর সাম্প্রতিক কার্যকলাপ এবং আচরণ দেখে রাজনৈতিক মহল বুঝে গেছে, অনুব্রত আগের মতোই কঠোর অবস্থানে আছেন। সুবিধাবাদী বা দ্বিচারিতার প্রতি তাঁর কোনও সহানুভূতি নেই, এবং যাঁরা দলের নাম ভাঙিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করছেন, তাঁদের প্রতি কড়া সতর্কবার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।
Anubrata Mondal বিকাশ রায়চৌধুরী এবং চন্দ্রনাথ সিংহদের সঙ্গে দেখা না করেই কেষ্ট মণ্ডল যেভাবে তাঁদের বাড়ির সামনে থেকে ফেরত পাঠিয়েছেন, তাতে বীরভূম জেলায় শাসক দলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে দলের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকেই ধারণা করছেন, দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট হচ্ছে। তবে, অন্যদিকে, দলের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত ঘোষ, বোলপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ-সহ বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কেষ্ট মণ্ডল সেইদিন দেখা করেছেন। পার্টি অফিসে বসে প্রায় আধঘণ্টা ধরে ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে তিনি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাও করেছেন। তাঁর এই বৈঠক রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে জল্পনা তৈরি করেছে।
Anubrata Mondal এক ঘনিষ্ঠ নেতা বললেন, “দাদা কখনও অতীত ভুলে যান না। সংকটের সময় কারা পাশে ছিলেন, তা তিনি ভালোভাবেই মনে রেখেছেন। কারা প্রকৃত বন্ধু আর কারা শুধু নামমাত্র বন্ধু, তা এখন স্পষ্ট বুঝে গেছেন দাদা। সেই কারণেই অনেক নেতার জন্য নিচুপট্টির বাড়িতে প্রবেশাধিকার ছিল না।” অনুব্রতর এই কড়া মনোভাব শাসক দলের অভ্যন্তরে নতুন করে সমীকরণ তৈরি করছে, যেখানে বিশ্বাসযোগ্যতা ও একনিষ্ঠতা প্রাধান্য পাচ্ছে।
Anubrata Mondal দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত প্রিয় অনুব্রত মণ্ডল–
Anubrata Mondal আসলে, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত প্রিয় অনুব্রত মণ্ডল, এ কথা সকলেই জানেন। দুই বছর জেলে থাকার পর ফিরে আসা অনুব্রতর হাত ধরেই যে আগামী দিনে বীরভূম জেলার রাজনীতির দিশা নির্ধারিত হবে, তা দলের নেতা-কর্মীদের মুখে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। তাঁরা আবারও পুরনো স্লোগান, “চড়াম চড়াম, গুড় বাতাসা” তুলে ধরেছেন। স্বাভাবিকভাবেই অনুব্রতর ফিরে আসা এবং চন্দ্রনাথ সিনহা ও বিকাশ রায়চৌধুরীর সঙ্গে দেখা না করার ঘটনা ঘিরে জেলাজুড়ে নতুন করে রাজনৈতিক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।
জল্পনা আরও বাড়ছে এই কারণে যে, বিরোধীদের চেয়ে এই মুহূর্তে দলের ভেতরের সমস্যা, বিশেষ করে সুবিধাবাদীদের নির্মূল করাই অনুব্রতর প্রধান লক্ষ্য হতে পারে। অনেকেই মনে করছেন, তিহাড় ফেরত অনুব্রত এখন দলের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা দূর করতেই মনোনিবেশ করেছেন, যা তাঁর ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিতে পারে।
Table of Contents
🔥 এগুলিও পড়ুন 👇👇
👉মুখ্যমন্ত্রীকে ‘সামাজিকভাবে বয়কটে’র সিদ্ধান্ত রাজ্যপালের, পালটা জবাব দিলেন কুণাল