October 21, 2024 by Saharuk khan
West Bengal Weather : বুধ সকালেই ঘূর্ণিঝড় তৈরি! এবার রক্ষা বাংলার? মঙ্গলবার রাতে বঙ্গোপসাগরের ওপর অতি গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে, যার নামকরণ করা হয়েছে ‘দানা’। বুধবার সকালে এটি সম্পূর্ণ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে সরাসরি আঘাত হানার সম্ভাবনা আপাতত কম। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ‘দানা’ ওড়িশা উপকূল ধরে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলের কাছাকাছি ল্যান্ডফল করতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সীমিত হলেও, উপকূলবর্তী জেলা যেমন পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং কলকাতায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। সতর্কতা হিসেবে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং প্রশাসন পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে। যারা উপকূলবর্তী অঞ্চলে বাস করছেন, তাদেরও নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর অবস্থান করা অতি গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। এটি বর্তমানে ঘণ্টায় প্রায় তিন কিলোমিটার গতিতে এগোচ্ছে। মঙ্গলবার রাত ১১টা ৩০ মিনিটের তথ্যে জানা গেছে, নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ থেকে প্রায় ৭২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে, ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৭২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছে।
West Bengal Weather : বুধ সকালেই ঘূর্ণিঝড় তৈরি! এবার রক্ষা বাংলার? ল্যান্ডফলের সময় ১২০ কিমিতে তাণ্ডব
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। ফলে ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে সর্তকতা জারি করা হয়েছে, এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলেও আবহাওয়ার পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।
আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের অতি গভীর নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’-র রূপ নিতে পারে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এটি শক্তি সঞ্চয় করে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে আরও প্রবল হয়ে উঠবে এবং একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড়টি প্রবল অবস্থাতেই উপকূলে আঘাত হানবে।
আনুমানিকভাবে, পুরী ও সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ল্যান্ডফল করার সময়, ঝড়টি ঘণ্টায় সর্বাধিক ১২০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে তীব্র ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসন ইতিমধ্যেই উপকূলবর্তী এলাকায় সতর্কতা জারি করেছে, এবং বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে এখনও নির্দিষ্টভাবে জানানো হয়নি ঘূর্ণিঝড়
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে এখনও নির্দিষ্টভাবে জানানো হয়নি ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ঠিক কোথায় ল্যান্ডফল করবে। যদিও ওড়িশার চাঁদবালি এলাকায় ল্যান্ডফল হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে কিছু জল্পনা ছিল, আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর তা নাকচ করে দিয়েছে।
বর্তমান পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথটি ধরা হচ্ছে যে, এটি বুধবার রাত ১১টা ৩০ মিনিট থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে ওড়িশার কোনো উপকূলবর্তী অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। যদিও এর চূড়ান্ত অবস্থান এখনো নিশ্চিত নয়, সম্ভাব্য এলাকাগুলিতে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। সরকারিভাবে এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট ল্যান্ডফল স্থানের কথা ঘোষণা করা হয়নি, তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী আপডেট দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র সম্ভাব্য প্রভাবের কারণে দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার এই সতর্কতার আওতায় যুক্ত হবে ঝাড়গ্রাম জেলা।
West Bengal Weather : বুধ সকালেই ঘূর্ণিঝড় তৈরি! এবার রক্ষা বাংলার? ল্যান্ডফলের সময় ১২০ কিমিতে তাণ্ডব
এই জেলাগুলির বিভিন্ন অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা ৭০ মিলিমিটার থেকে ২০০ মিলিমিটারের মধ্যে হতে পারে। বিশেষ কিছু অঞ্চলে ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা অত্যধিক ভারী বর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে এবং বাসিন্দাদের সাবধান থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র সম্ভাব্য প্রভাবের কারণে দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া, শুক্রবারও এই সতর্কতার আওতায় যুক্ত হয়েছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া।
যেসব জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে, সেখানে একটি বা দুটি অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা ৭০ মিলিমিটার থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। প্রয়োজনীয় সাবধানতা নেওয়ার জন্য বাসিন্দাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, এবং প্রশাসন পরিস্থিতির উপর নজরদারি করছে।
West Bengal Weather : বুধ সকালেই ঘূর্ণিঝড় তৈরি! এবার রক্ষা বাংলার? ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র সম্ভাব্য প্রভাবের কারণে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের মতে, বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ার একাধিক অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই জেলাগুলিতে ৭০ মিলিমিটার থেকে ১১০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে।
West Bengal Weather : বুধ সকালেই ঘূর্ণিঝড় তৈরি! এবার রক্ষা বাংলার? শুক্রবার পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ার কিছু এলাকায়ও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এই দিনগুলিতে, যেসব জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে, সেখানে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রশাসন পরিস্থিতির উপর নজরদারি রাখছে, এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার জন্য বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র আগমন উপলক্ষে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় আবহাওয়া দ্রুত পরিবর্তিত হবে। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই এই অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়া শুরু হবে, যা ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হবে। মাঝে মাঝে দমকা হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
West Bengal Weather : বুধ সকালেই ঘূর্ণিঝড় তৈরি! এবার রক্ষা বাংলার? ল্যান্ডফলের সময় ১২০ কিমিতে তাণ্ডব
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঝড়ের তীব্রতা আরও বেড়ে যাবে, তখন ঘণ্টায় বেগ হতে পারে প্রায় ৮০ কিলোমিটার। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত, যখন ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ১১০-১২০ কিলোমিটারে পৌঁছাবে এবং দমকা হাওয়ার গতি কখনও কখনও ১২০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তবে শুক্রবার সকাল পর থেকে ধীরে ধীরে ঝড়ের দাপট কমতে শুরু করবে। প্রশাসন আগাম সতর্কতা জারি করেছে এবং উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
Table of Contents
🔥 এগুলিও পড়ুন 👇👇
👉Air India flight বোমার হুমকির কারণে নিউইয়র্কগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট দিল্লির দিকে মোড় নেয়